Dhaka ০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নতুন রাইডে আকর্ষণ বাড়ছে পর্যটকদের, বাগেরহাটের চন্দ্রমহল ইকোপার্কে বাড়ছে দর্শনার্থীর ভিড়।

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:৩০:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৩
  • ১৬৯১ Time View
নতুন রাইডে আকর্ষণ বাড়ছে পর্যটকদের, বাগেরহাটের চন্দ্রমহল ইকোপার্কে বাড়ছে দর্শনার্থীর ভিড়।
মেহেদি হাসান নয়ন, বাগেরহাট –
ভারতের আগ্রার তাজমহলের আদলে গড়ে তোলা বাগেরহাট চন্দ্রমহল ইকোপার্কে প্রতিনিয়ত বাড়ছে দর্শনার্থীর ভিড়। বাগেরহাট সদর উপজেলার রনজিতপুর এলাকায় অবস্থিত “চন্দ্রমহল ইকোপার্ক” এখন বিনোদন প্রেমীদের অন্যতম আকর্ষনে পরিনত হয়েছে। নতুন নতুন সব রাইডে শিশুদের পাশাপাশি আগ্রহ বাড়ছে বড়দেরও। তাই শীতের আমাজে পরিবার নিয়ে ছুটি কাটাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে থেকে অনেকেই আসচ্ছেন মসজিদের শহর বাগেরহাটে। বাগেরহাট ঘুড়তে আসা এসব পর্যটকরা বিশ^ ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ ও সুন্দরবন দেখার পাশাপাশি মুগ্ধ হচ্ছেন চন্দ্রমহল ইকোপার্ক দেখেও।
২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থী ভিড় করছেন পার্কটিতে। চন্দ্রমহল ইকোপার্কটি সৃষ্টির মধ্যে সৃজনশীলতা রয়েছে। এর মাধ্যমে শুধু বিনোদনই নয়, ইতিহাস ঐতিহ্য জানারও সুযোগ রয়েছে। বিশ^ ঐতিহ্য সুন্দরবন, ষাটগম্বুজ মসজিদ, খানজাহান (রহঃ) এর মাজারের পাশাপাশি চন্দ্র মহলেও দর্শনার্থীরা ভ্রমণ করছেন। শতাধিক নারিকেল গাছ, বাহারী দেশি-বিদেশী ফুল-ফল, শিশুদের জন্য ট্রেন, হেলিকাপ্টারসহ আকর্ষনীয় নানা রাইড ও ইতিহাস ঐতিহ্য বিষয়ক নানা প্রতিকৃতি দিয়ে সাজানো এই নান্দনিক পার্ক দেখে মুগ্ধ হচ্ছে দর্শনার্থীরা।
পার্কটির প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ আমানুল হুদার স্ত্রী নাসিমা হুদা চন্দ্রার নামানুসারেই পার্কটির নামকরণ করা হয়েছে। প্রায় ১০ একর জমির ওপর গড়ে ওঠা এই চন্দ্রমহলের মূল আকর্ষণ ভারতের তাজমহলের আদলের তৈরী বাড়ীটি। যার চারিদিকে পানিবেষ্টিত। একপাশে বাঁশের পুল দিয়ে এখানে যেমন যাওয়া যায় তেমনি মূল প্রবেশ পথটি পানির মধ্য সুড়ঙ্গ পথ দিয়েও যাওয়া যায়। যার দু’পাশে রয়েছে দেশি-বিদেশী নানা প্রজাতির ফুল গাছ। এছাড়া বিভিন্ন ভাস্কর্যের মাধ্যমে দেশীয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়েছে। এখানে বেশ কয়েকটি পুকুর রয়েছে। চন্দ্রমহলের অভ্যন্তরে প্রতিষ্ঠাতার সংগৃহীত বিভিন্ন জিনিসপত্র প্রদর্শিত হয়েছে। সেখানে গ্রাম্য মানুষের চরিত্র নিয়ে প্রতিকৃতি তৈরি করা হয়েছে। আদি আসবাবপত্র আর তৈজসপত্র ছাড়া কিছু স্থির ছবি রয়েছে সেখানে। লেকের পাড় রয়েছে নারিকেল গাছের সারি। গ্রাম পঞ্চায়েত ও মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্যের পাশাপাশি রয়েছে মাস্টারদা সূর্যসেন, বেগম রোকেয়া, আতাউল গনি ওসমানী, মাদার তেরেসা, মহাত্মা গান্ধীর ভাস্কর্যও। রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলসহ কবি-সাহিত্যিকদের সংপ্তি জীবনীও। শিশুদের খেলার জন্য রয়েছে রেলগাড়ি, মটর বাইকসহ অন্যান্য খেলনা সামগ্রী। ঢাকা থেকে চন্দ্রমহলে ঘুরতে আসা সামসুল আলম বলেন, পরিবার নিয়ে ঘুড়তে আসচ্ছি। আমি ভারতের তাজমহল দেখিনি। কিন্তু তাজমহলের আদলে তৈরী চন্দ্রমহল দেখে খুব ভালো লাগলো। বরিশাল থেকে ঘুরতে আসা শেখ সায়মন বলেন, বাগেরহাট ঘুড়তে আসচ্ছি বন্ধুদের সাথে। উদ্দেশ্য ছিলো ষাটগম্বুজ মসজিদ ও সুন্দরবন দেখবো। এখানে এসে চন্দ্রমহল পার্কের বিষয়ে জানতে পেরে, বন্ধুদের সাথে চলে আসলাম। এখানে এসে বেশি ভােেলালাগছে। চারপাশে নানার রঙের ফুল দেখে মনটা জুড়িয়ে গেলো। গাজীপুর থেকে স্বামীর সাথে ঘুড়তে আসা আসমা-উল হুসনার ও স্বামী রবিউল ইসলাম বলেন, আমাদের নতুন বিয়ে হয়েছে। অনেক আগে থেকেই ইচ্ছা ছিলো মসজিদের শহর বাগেরহাট ঘুরে দেখার। তাই সময় নিয়ে চলে আসলাম। গত দুইদিন ধরে বাগেরহাটের ঐতিহ্যাসিক নানা স্থাপনা ঘুরে দেখেছি। খুবই ভালো লেগেছে। তবে চন্দ্রমহল পার্কটি দেখে বেশি ভালো লেগেছে। শহরের যান্ত্রিক পরিবেশের বাইরে এত সুন্দর পরিবেশ, যে কারও ভালো লাগবে। চন্দ্রমহলের দেখাশোনার দায়িত্বে নিয়োজিত ম্যানেজার কাবুল শেখ বলেন, বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের হাকিমপুরের বিশিষ্ট শিানুরাগী ও শিল্পপতি সৈয়দ আমানুল হুদা রণজিৎপুর গ্রামে ভারতের তাজমহলের আদলে চন্দ্রমহল নির্মাণ করেন ২০০১ সালে। যেটি ২০০৯ সালে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। সেই থেকে এখন পর্যন্ত দেশি-বিদেশী দর্শনার্থীরা বেড়াতে আসেন। করোনার কারনে কিছুটা তিগ্রস্থ হলেও এখন আবারো পর্যটকদের আনা গোনায় জমজমাট হয়ে উঠছে পার্কটি। এছাড়া পর্যটকদের কাছে পার্কটি আরও আকর্ষনীয় করে তুলতে নতুন নতুন সব রাইড যোগ করা হয়েছে। যার ফলে দর্শনার্থী আগমনের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।  প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পার্কটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে। পার্কটিতে জনপ্রতি প্রবেশমূল্য ৫০ টাকা।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বোয়ালমারীতে চার বছর কর্মস্থলে না গিয়েও বেতন ভাতা নিচ্ছে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঝুমা !

নতুন রাইডে আকর্ষণ বাড়ছে পর্যটকদের, বাগেরহাটের চন্দ্রমহল ইকোপার্কে বাড়ছে দর্শনার্থীর ভিড়।

Update Time : ০৮:৩০:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৩
নতুন রাইডে আকর্ষণ বাড়ছে পর্যটকদের, বাগেরহাটের চন্দ্রমহল ইকোপার্কে বাড়ছে দর্শনার্থীর ভিড়।
মেহেদি হাসান নয়ন, বাগেরহাট –
ভারতের আগ্রার তাজমহলের আদলে গড়ে তোলা বাগেরহাট চন্দ্রমহল ইকোপার্কে প্রতিনিয়ত বাড়ছে দর্শনার্থীর ভিড়। বাগেরহাট সদর উপজেলার রনজিতপুর এলাকায় অবস্থিত “চন্দ্রমহল ইকোপার্ক” এখন বিনোদন প্রেমীদের অন্যতম আকর্ষনে পরিনত হয়েছে। নতুন নতুন সব রাইডে শিশুদের পাশাপাশি আগ্রহ বাড়ছে বড়দেরও। তাই শীতের আমাজে পরিবার নিয়ে ছুটি কাটাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে থেকে অনেকেই আসচ্ছেন মসজিদের শহর বাগেরহাটে। বাগেরহাট ঘুড়তে আসা এসব পর্যটকরা বিশ^ ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ ও সুন্দরবন দেখার পাশাপাশি মুগ্ধ হচ্ছেন চন্দ্রমহল ইকোপার্ক দেখেও।
২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থী ভিড় করছেন পার্কটিতে। চন্দ্রমহল ইকোপার্কটি সৃষ্টির মধ্যে সৃজনশীলতা রয়েছে। এর মাধ্যমে শুধু বিনোদনই নয়, ইতিহাস ঐতিহ্য জানারও সুযোগ রয়েছে। বিশ^ ঐতিহ্য সুন্দরবন, ষাটগম্বুজ মসজিদ, খানজাহান (রহঃ) এর মাজারের পাশাপাশি চন্দ্র মহলেও দর্শনার্থীরা ভ্রমণ করছেন। শতাধিক নারিকেল গাছ, বাহারী দেশি-বিদেশী ফুল-ফল, শিশুদের জন্য ট্রেন, হেলিকাপ্টারসহ আকর্ষনীয় নানা রাইড ও ইতিহাস ঐতিহ্য বিষয়ক নানা প্রতিকৃতি দিয়ে সাজানো এই নান্দনিক পার্ক দেখে মুগ্ধ হচ্ছে দর্শনার্থীরা।
পার্কটির প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ আমানুল হুদার স্ত্রী নাসিমা হুদা চন্দ্রার নামানুসারেই পার্কটির নামকরণ করা হয়েছে। প্রায় ১০ একর জমির ওপর গড়ে ওঠা এই চন্দ্রমহলের মূল আকর্ষণ ভারতের তাজমহলের আদলের তৈরী বাড়ীটি। যার চারিদিকে পানিবেষ্টিত। একপাশে বাঁশের পুল দিয়ে এখানে যেমন যাওয়া যায় তেমনি মূল প্রবেশ পথটি পানির মধ্য সুড়ঙ্গ পথ দিয়েও যাওয়া যায়। যার দু’পাশে রয়েছে দেশি-বিদেশী নানা প্রজাতির ফুল গাছ। এছাড়া বিভিন্ন ভাস্কর্যের মাধ্যমে দেশীয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়েছে। এখানে বেশ কয়েকটি পুকুর রয়েছে। চন্দ্রমহলের অভ্যন্তরে প্রতিষ্ঠাতার সংগৃহীত বিভিন্ন জিনিসপত্র প্রদর্শিত হয়েছে। সেখানে গ্রাম্য মানুষের চরিত্র নিয়ে প্রতিকৃতি তৈরি করা হয়েছে। আদি আসবাবপত্র আর তৈজসপত্র ছাড়া কিছু স্থির ছবি রয়েছে সেখানে। লেকের পাড় রয়েছে নারিকেল গাছের সারি। গ্রাম পঞ্চায়েত ও মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্যের পাশাপাশি রয়েছে মাস্টারদা সূর্যসেন, বেগম রোকেয়া, আতাউল গনি ওসমানী, মাদার তেরেসা, মহাত্মা গান্ধীর ভাস্কর্যও। রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলসহ কবি-সাহিত্যিকদের সংপ্তি জীবনীও। শিশুদের খেলার জন্য রয়েছে রেলগাড়ি, মটর বাইকসহ অন্যান্য খেলনা সামগ্রী। ঢাকা থেকে চন্দ্রমহলে ঘুরতে আসা সামসুল আলম বলেন, পরিবার নিয়ে ঘুড়তে আসচ্ছি। আমি ভারতের তাজমহল দেখিনি। কিন্তু তাজমহলের আদলে তৈরী চন্দ্রমহল দেখে খুব ভালো লাগলো। বরিশাল থেকে ঘুরতে আসা শেখ সায়মন বলেন, বাগেরহাট ঘুড়তে আসচ্ছি বন্ধুদের সাথে। উদ্দেশ্য ছিলো ষাটগম্বুজ মসজিদ ও সুন্দরবন দেখবো। এখানে এসে চন্দ্রমহল পার্কের বিষয়ে জানতে পেরে, বন্ধুদের সাথে চলে আসলাম। এখানে এসে বেশি ভােেলালাগছে। চারপাশে নানার রঙের ফুল দেখে মনটা জুড়িয়ে গেলো। গাজীপুর থেকে স্বামীর সাথে ঘুড়তে আসা আসমা-উল হুসনার ও স্বামী রবিউল ইসলাম বলেন, আমাদের নতুন বিয়ে হয়েছে। অনেক আগে থেকেই ইচ্ছা ছিলো মসজিদের শহর বাগেরহাট ঘুরে দেখার। তাই সময় নিয়ে চলে আসলাম। গত দুইদিন ধরে বাগেরহাটের ঐতিহ্যাসিক নানা স্থাপনা ঘুরে দেখেছি। খুবই ভালো লেগেছে। তবে চন্দ্রমহল পার্কটি দেখে বেশি ভালো লেগেছে। শহরের যান্ত্রিক পরিবেশের বাইরে এত সুন্দর পরিবেশ, যে কারও ভালো লাগবে। চন্দ্রমহলের দেখাশোনার দায়িত্বে নিয়োজিত ম্যানেজার কাবুল শেখ বলেন, বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের হাকিমপুরের বিশিষ্ট শিানুরাগী ও শিল্পপতি সৈয়দ আমানুল হুদা রণজিৎপুর গ্রামে ভারতের তাজমহলের আদলে চন্দ্রমহল নির্মাণ করেন ২০০১ সালে। যেটি ২০০৯ সালে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। সেই থেকে এখন পর্যন্ত দেশি-বিদেশী দর্শনার্থীরা বেড়াতে আসেন। করোনার কারনে কিছুটা তিগ্রস্থ হলেও এখন আবারো পর্যটকদের আনা গোনায় জমজমাট হয়ে উঠছে পার্কটি। এছাড়া পর্যটকদের কাছে পার্কটি আরও আকর্ষনীয় করে তুলতে নতুন নতুন সব রাইড যোগ করা হয়েছে। যার ফলে দর্শনার্থী আগমনের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।  প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পার্কটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে। পার্কটিতে জনপ্রতি প্রবেশমূল্য ৫০ টাকা।